প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালিগালাজ করলে ভায়বহ পরিণত হবে বলে হুঁশিয়ারি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। রোববার সকালে (২৯ মে) তার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন। কাদের বলেন, ‘১৫ আগস্টের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’স্লোগান বিএনপি যে ঘাতক দল তার পরিচয় বহন করে।
এর আগে শনিবার (২৮ মে) কাদের বলেন, তারেক রহমানকে টেমস নদীর ওপার থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে খোমেনি স্টাইলে বিপ্লব করার দুঃস্বপ্ন দেখছে বিএনপি। বিএনপি’র গণআন্দোলন মানে দুঃস্বপ্নের নামান্তর, দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি বলেন, আওয়ামী সরকারের উন্নয়নে জনগণ বিশ্বাস করে বলেই, ১৩ বছরেও বিএনপির ডাকে সাড়া দেয়নি দেশের জনগণ।
জাতীয় প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি ও তাদের দোসররা সমাবেশের নামে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে,তাদের বক্তব্য বিবৃতিতে কোন শালীনতা, সৌজন্যবোধও দেখাচ্ছে না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়েও তারা নোংরা ভাষায় শ্লোগান দিচ্ছে, যা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ সরকারের অধীনে নাকি আর কোন নির্বাচন হবে না,নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, - বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন বাংলাদেশের জনগণ কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাচারী ও দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যকে মেনে নেয় না।কোন ষড়যন্ত্রকারীর রক্তচক্ষু ও ত্রাসের কাছে মাথা নত করে না।
তিনি বলেন বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার বুটের তলায় পিষ্ট করে কারফিউ মার্কা গণতন্ত্র চাপিয়ে দিয়ে জাতির সঙ্গে তামাশা করেছিলেন। একই সাথে সেনাপ্রধান এবং রাষ্ট্রপতির পদ দখল করে সংবিধান ও আইনকে ভূলুন্ঠিত করেছিলেন। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে সে অপরাজনীতির ঐতিহ্য বহন করে চলেছে আজকের বিএনপি। যার ধারাবাহিকতায় কোন আইন বা নিয়ম নীতির কথা শুনলেই বিএনপি নেতাদের গায়ে জ্বালা ধরে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে বলেন নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, আর এ নির্বাচন কমিশনের অধীনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সরকারের অধীনে নয়।
শেখ হাসিনা সরকার শুধু নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সংবিধান অনুযায়ী সেভাবেই যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি মহাসচিবের নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন এটা বিএনপি মহাসচিবের মামার বাড়ীর আবদার। বিএনপি একেক সময় একেক দাবি নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে আরও বলেন তারা কখনো বলে জাতীয় সরকার, কখনো তত্বাবধায়ক, আবার কখনো বলে নিরপেক্ষ সরকার, দেখতে দেখতে এক যুগেরও বেশি সময় পার করলেন বিএনপি নেতারা কিন্তু এখনো জনগণের কাছে স্পষ্ট করতে পারেনি আসলে বিএনপি কী চায়? বিএনপির তত্বাবধায়ক সরকারের দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন এটা তো মীমাংসিত একটি বিষয়,দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তত্বাবধায়ক সরকার এখন জাদুঘরে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন বিএনপির নেত্রীই তো বলেছিলেন শিশু আর পাগল ছাড়া কেউ নাকি নিরপেক্ষ নয়। তবে কি ক্ষমতা পাগল বিএনপি কোন শিশু আর পাগলের অধীনে নির্বাচন চায় কিনা সেটাই প্রশ্ন? আওয়ামী লীগকে নাকি আর ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া হবে না,- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ওবায়দুল কাদের বলেন ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া না দেওয়ার বিএনপি কে? ক্ষমতা দেওয়ার মালিক মহান আল্লাহপাক, এবং ক্ষমতার উৎস এদেশের জনগণ। তিনি আবারও স্পষ্ট করে বলেন যতদিন জনগণ চাইবে ততদিন শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকবে।