পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশকে ‘বেহেশত’ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনগণের সঙ্গে ‘তামাশা’ করছেন।
শনিবার (১৩ আগস্টা) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ যখন প্রতি মুহূর্তে ভোগান্তি পোহাচ্ছে, কষ্ট করছে, সেই সময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, (মানুষ) বেহেশতে আছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমি দুঃখিত ব্যক্তিগত পর্যায়ে কথা বলছি। ইদানীং উনার (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) চেহারার মধ্যে যেটা ফুটে উঠেছে…ক্ষিপ্ত হয়েছেন; বেশিরভাগ মন্ত্রীদের যেটা হয়েছে…প্রচুর লুটপাট হচ্ছে। সেই লুটপাটের কারণে তারা জনগণের সঙ্গে পরিহাস, তামাশা শুরু করেছে।”
সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয় এর আগেও এমন এমন সব উক্তি করেছেন, যেগুলো কিছুটা হাস্যকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে উনার এরকম পরিহাস করার কোনো অধিকার নেই।’
মহাসচিব অভিযোগ করেন, সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে ২০২২ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা ২৫ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে ১৪ হাজার মেগাওয়াট, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার উচ্ছাসও উদযাপন করা হলো। এক যুগেরও বেশী সময় ধরে নজিরবিহিন অর্থ খরচ করে জনগনকে কেন আবার লোডশেডিংয়ে পড়তে হচ্ছে-প্রশ্ন রাখেন মির্জা ফখরুল।
মির্জা ফখরুল তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, সরকার গত দেড় দশক ধরে উন্নয়নের যে ঢোল বাজিয়ে আসছে তন্মধ্যে একটি বড় অংশ জুড়ে ছিল বিদ্যুৎ খাত। দাবি করা হচ্ছে যে ২০২২ সালে এসে ক্যাপাসিটিসহ বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে এবং সর্বোচ্চ উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট। গত ১০ জুলাই ২০২২ ইং সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ১১ হাজার ৭৬০ মেগাওয়াট। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া উদযাপন করা হ'ল ঘটা করে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এত নজিরবিহীন অর্থ ব্যয় করেও কেন পুনরায় দেশের জনগণকে লোডশেডিংই বরণ করতে হচ্ছে, আজ কেন তবে বিদ্যুতের ব্যবহার কমিয়ে সাশ্রয়ী হওয়ার নসিহত দেয়া হচ্ছে, কেন আজ অন্ধকারাচ্ছন্ন দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত, কেন সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছে, কেন বিদ্যুৎ খাত আজ অর্থনীতির জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে? বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর উত্তর একটাই, সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি আর হরিলুটের খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে।
মির্জা ফখরুল দাবি করেন, গত এক যুগ ধরে দায়মুক্তি আইন করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিনা টেন্ডারে বিনা প্রতিযোগিতায় যেসব অপরিণামদর্শী, অসম ও আত্মঘাতী বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার চুক্তি করা হয়েছে সরকারের উচ্চ পর্যায় ও সরকার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের অবৈধ অর্থ লুটপাটের সুযোগ করে দেয়ার জন্য, স্বল্প সময়ের কথা বলে যেসকল রেন্টাল, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, প্রয়োজন না থাকা সত্বেও সেগুলো আবার আগের শর্তেই নবায়ন করা হয়েছে এবং হচ্ছে, চাহিদা না থাকা সত্বেও নতুন নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। বিদ্যুৎ না কিনেই অলস বসিয়ে বসিয়ে বিদেশী এবং দেশীয় সরকারঘনিষ্ঠ বিশেষ বিশেষ রাঘববোয়ালদের মালিকানাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে এ পর্যন্ত যে বিপুল অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে এবং সামনে আরো বেশি পরিশোধ করা হবে।
দেশীয় গ্যাস উত্তোলন না করে আমাদানিকৃত জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ যে অপরিণামদর্শী তথাকথিত মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, এখন তারই মূল্য বা মাশুল দিতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে। এখন শহরে দুই-তিন ঘণ্টা এবং গ্রামঞ্চলে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা লোডশেডিং জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। ফিরে যেতে হচ্ছে হারিকেন আর মোমবাতির জগতে। শিল্পে ও কৃষিতে উৎপাদন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির ওপর চরম বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এ পর্যন্ত ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা গচ্চা দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব ব্যবসায়ীদের পকেটেই গেছে ৬০ হাজার কোটি টাকা। বিশেষ আইনে স্থাপিত রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল ১৯টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালুর দুই-তিন বছরের পর বন্ধ হওয়ার কথা থাকলেও প্রয়োজন ছাড়াই তা এখনো চালু আছে। বেশ কিছু রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদন না করেও ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ বিপুল অর্থ নিয়ে যাচ্ছে। আবার এক হিসেবে গত এক যুগে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ গচ্চা গেছে প্রায় ৮ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। গত ৩ বছরেই ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করা হয়েছে ৫৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকদের পকেটে গেছে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। সম্প্রতি পিডিবি কর্তৃক বিদ্যুৎ বিভাগে পাঠানো প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। বিদ্যুতের চাহিদা সঠিকভাবে নির্ধারণ না করেই চাহিদার অনেক বেশি পাওয়ার প্ল্যান্টের সাথে চুক্তি করে দুর্নীতিপরায়ণ ব্যবসায়ীদের লুট করার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।
তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে মোট বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাত্র ৪৩% ব্যবহার করা হয়। অবশিষ্ট ৫৭% অলস বসিয়ে কেন্দ্র ভাড়া দেয়া হয়। গড় চাহিদার অতিরিক্ত স্থাপিত বিদ্যুৎকেন্দ্রসমূহের জন্য সরকারকে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ না কিনেই বিদায়ী অর্থবছরের নয় মাসে বিল পরিশোধ করা হয়েছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা। তার আগের অর্থবছরে একই সময়ে চার্জ পরিশোধ করা হয়েছে ১৪ হাজার ২৩২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে এই খাতে ব্যয় হয়েছে ২১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ বৃদ্ধি পেয়েছে ১৮%। ক্রমেই ক্যাপাসিটি চার্জের বিল বেড়েই যাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, বিদ্যুতের চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন কম হওয়ার যুক্তি দেখিয়ে বিনা টেন্ডারে বিশেষ দায়মুক্তি আইন করে ২০১০ সালে আপতকালীন ও স্বল্প সময়ের কথা বলে ১৯ টি উচ্চমূল্যের রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল স্থাপনের অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। সেই আপৎকালীন 'স্বল্প মেয়াদ' আজও শেষ হয়নি। দুই-তিন দফা মেয়াদ বাড়িয়ে এখনও ডজনখানেক কেন্দ্র চালু রাখা হয়েছে। এমনকি জ্বালানি সংকটের কারণে সরকার যখন ঘোষণা দিয়ে ৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছিল তখনও ৪টি উচ্চব্যয়ের কুইক রেন্টালের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। অথচ এ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে বেশিরভাগ সময়ই বসিয়ে রাখা হচ্ছে। প্রথমদিকে কাজ পাওয়ার জন্য উদ্যোক্তাদের কিছু পূর্ব যোগ্যতার কথা থাকলেও পরে সরকারের ঘনিষ্ঠজনেরা, এমনকি বিদ্যুৎখাত অনভিজ্ঞ ফার্নিচার, লবন এবং সিমেন্ট ব্যবসায়ীরাও বিদ্যুৎ খাত ব্যবসায় নেমে পড়ে যা বিদ্যুৎখাতে বিপর্যয় ডেকে আনে। প্রাথমিকভাবে ২/৩ বছরের চুক্তি করায় বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করা হয়। বলা হয়েছিল- মেয়াদ বেশি হলে এই দাম কম হতো। কিন্তু পরে এসব কেন্দ্রের মেয়াদ একাধিকবার বাড়ানো হয়। তিন থেকে ৫ বছরের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ১০/১২ বছর চুটিয়ে ব্যবসা করছে। তবে বিদ্যুতের দাম কমেনি। তাছাড়া চুক্তির সময় অনেক কেন্দ্রের প্ল্যান্ট ফ্যাক্টর বেশি করে ধরে বিদ্যুতের দর বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ক্যাব এর জ্বালানি উপদেষ্টাসহ বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরাও বলছেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা ব্যবসায়ীদের সুযোগ দিতেই দায়মুক্তির বিশেষ আইনে দরপত্র ছাড়াই রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র দেওয়া হয়েছে।
মির্জা ফখরুল জানান, বিদ্যুতের ক্ষেত্রে ক্যাপাসিটি চার্জ একটা স্বীকৃত পদ্ধতি। কিন্তু বাংলাদেশে যা হয়েছে তা কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে লাভবান করার জন্য করা হয়েছে। প্রথমত, ক্যাপাসিটি চার্জ অনেক বেশি ধরা হয়েছে। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বেশির ভাগই আসলে পুরনো। উৎপাদন সক্ষমতা যতটুকু দেখানো হয় ততটুকু নেই। অথচ বলা হচ্ছে, উৎপাাদন ক্ষমতা প্রকৃত চাহিদার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। তাহলে এ ব্যয়বহুল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো কেন এখনো বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে না। আর কেনই বা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বসিয়ে রেখে জনগণের পকেট থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে গুটিকয়েক বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীর পকেটে দেয়া হচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের সূত্র অনুযায়ী গ্যাস ভিত্তিক উৎপাদিত বিদ্যুৎ ১৫৯৯৬ মে:ও: এর জন্য আনুমানিক ২৫০০-২৭০০ এমএমসিএফডি গ্যাস প্রয়োজন। বাস্তবে ৯০০-১০০০ এমএমসিএফডি গ্যাস জ্বালানি বিভাগ হতে সরবরাহ করা হচ্ছে। গ্যাস উত্তোলনের সক্ষমতা বৃদ্ধি না করে আইপিপি-এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ক্যাপাসিটি চার্জের বোঝা অন্যায়ভাবে জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দশ বছরে বাপেক্সের-এর মাধ্যমে নতুন গ্যাস উত্তোলনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগায়নি। এমনকি বিদ্যমান গ্যাস ফিল্ডসমুহের রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের মাধ্যমেও বর্তমান পরিস্থিতিতে ২০% অধিক গ্যাস সরবরাহ করা যেত, তাও করা হয়নি। এভাবে গ্যাসের কৃত্তিম অভাব সৃষ্টি করে দুর্নীতির মাধ্যমে দলীয় ব্যবসায়ীদের আমদানিকৃত এলএনজি নির্ভর প্ল্যান্ট নির্মাণ করে অবারিত দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে সরকার।
বিএনপির অভিযোগ, সরকার বিগত এক দশকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দৃশ্যমান উন্নয়নের নামে ৪০টিরও অধিক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিপুল পরিমাণ বিদেশী ঋণ নিয়েছে। স্বাভাবিকভাবে একই সঙ্গে জনগণের কাঁধে ঋণের বোঝাও বেড়েই চলছে। প্রায় সবগুলো প্রকল্পই ধীরগতিতে চলায় জনভোগান্তির পাশাপাশি প্রকল্প ব্যয়ও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিদেশী ঋণের ওপর নির্ভরতাকে আরও বাড়িয়ে অর্থনীতিকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। শ্রীলংকায়ও দেখা গিয়েছে ৫ বছরের প্রকল্প ৭ বছরেও শেষ হয়নি। এক গবেষণায় দেখা যায়, প্রধান ২০টি প্রকল্প নির্মাণে ৪২.৮৬ বিলিয়ন ডলার বিদেশী ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ, স্থানীয় মুদ্রায় যা ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা। ২০২৪ সাল নাগাদ ১৩টি প্যাকেজের আওতায় নেয়া ৩২ বিলিয়ন ডলার ঋণের সুদ পরিশোধ শুরু হবার কথা। ২০২৪-২৬ সালের মধ্যে ঋণ পরিশোধের বড় চাপ আসবে এবং দিন দিন তা আরো বাড়তেই থাকবে। তখন পরিস্থিতি সামাল দেয়া হবে বড় চ্যালেঞ্জ। ইতোমধ্যেই চলমান রিজার্ভের টালমাটাল অস্থিরতা, ব্যাংকিং খাতে চরম অরাজকতা ও অব্যবস্থাপনা, তীব্র জ্বালানী সংকট, ডলার ঘাটতির কারণে আমদানি ব্যয় নির্বাহের সংকট, বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে উৎপাদন ব্যহত হয়ে সম্ভাব্য রফতানি সংকট, সব মিলিয়ে অর্থনীতি এক মহাসংকটে নিপতিত হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সারাদেশে লোডশেডিং এর নামে চলছে জনভোগান্তি। শহরের চেয়ে গ্রামে এ ভোগান্তি অনেক বেশি। গ্রামে লোডশেডিং এতো বেশি লম্বিত হচ্ছে যে, বিদ্যুৎ কখন থাকে এখন সেটাই যেন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষি শিল্পসহ সকল উৎপাদন খাত দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে, এখন বিদ্যুতের লোডশেডিংজনিত জনদুর্ভোগ মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে যুক্ত হয়েছে। মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। চরমভাবে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে সাধারণ জনগণের।
বিদ্যুৎ খাতের এই বিপর্যয়, রিজার্ভের সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থনৈতিক নৈরাজ্য ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের নাভিশ্বাসের দায় নিয়ে সরকারকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগের দাবী জানাান বিএনপি মহাসচিব। তা না হলে দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে পদত্যাগে বাধ্য করার হুমকিও দেন তিনি।