করোনা সংক্রমণ রোধে সারাদেশে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের আজ নবম দিন। এ সময় সরকার সব পোশাক কারখানা ও রফতানিমুখী শিল্পকারখানা খুলে দিচ্ছে। এতে ঢাকা ফিরতে শুরু করেছেন পোশাক কারখানা ও শিল্পকারখানার শ্রমিকরা। ফলে চাপ বাড়ছে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে।শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকেই দৌলতদিয়া ঘাটে ঢাকামুখী মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা যাত্রীরা দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে এসে জড়ো হতে দেখা যায়। গণপরিবহন ও দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় থ্রি-হুইলার, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, মাহেন্দ্রতে করে যাত্রীরা ঘাট এলাকায় আসছে। আবার অনেকেই ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ভ্যানে করে ঘাট এলাকায় আসছে। এ সময় অনেককে হেঁটে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক দিয়ে ঘাট এলাকায় আসতে দেখা যায়।
তবে দীর্ঘক্ষণ ফেরিঘাটে অবস্থান করলেও ফেরি পরিপূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তারা নদী পাড়ি দিতে পারছেন না। সে ক্ষেত্রে ফেরির পন্টুনে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা গাদাগাদি করে ফেরিতে উঠে যাচ্ছেন।
এ সময় ৫ নম্বর ফেরিঘাটে অবস্থান করে দেখা যায়, শহ পরান নামক ফেরি প্রায় পাঁচ শতাধিক যাত্রী নিয়ে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ার উদ্দেশে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে যাচ্ছে। এ সময় যাত্রীদের মধ্যে কোনো স্বাস্থ্যবিধির বালাই চোখে পড়েনি। আবার অনেকের মুখে নেই কোনো মাস্ক।
কালুখালি থেকে অটোরিকশা রিজার্ভ করে দৌলতদিয়া ঘাটে আসা মিরাজ শেখ বলেন, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসছিলাম। লকডাউনের কারণে ঢাকাতে ফেরা হয়নি। কিন্তু রোববার থেকে গার্মেন্টস খোলা। তাই তারাহুড়ো করেই যেতে হচ্ছে কর্মস্থলে। গণপরিবহন বন্ধ। তাই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অটো রিজার্ভ করে ঘাটে এসেছি। এখন নদী পার হয়ে ঢাকা পর্যন্ত যেতে পারলেই হয়।
যশোর থেকে ভোরে রওনা করেন সাভারের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক তুহিন ইসলাম। দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ফেরিঘাট এলাকায় তিনি বলেন, ঈদের পরদিন গ্রামের বাড়ি যাই। একবার আসতে চেয়েছিলাম না। পরে মা-বাবার অনুরোধে এসেছি। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পোশাক কারখানা বন্ধ ছিল। হঠাৎ ঘোষণা আসে রোবাবার থেকে শিল্পকারখানা খুলবে। তাই তড়িঘড়ি করে কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছি।
একাধিক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, হঠাৎ করেই শুক্রবার জানানো হলো যে রোববার থেকে কারখানা খোলা। হাতে সময় কম। তাই ভোগান্তি মাথায় নিয়ে ফিরতে হচ্ছে রাজধানীতে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ রুটে ১৬টি ফেরির মধ্যে ৮টি ফেরি দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। রোববার পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ার কথা শুনে মানুষ তাদের কর্মস্থলে ফিরছে। তাই ঘাট এলাকায় যাত্রীদের চাপ বেড়েছে।