মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ফাইফার ও লিটন দাসের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৬ষ্ঠ হাফসেঞ্চুরিতে স্বাগতিক জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে সমতায় ফিরলো বাংলাদেশ। গতকাল প্রথম টি-টোয়েন্টিতে লড়াইয়ের পরও ১৭ রানে পরাজিত হয় টাইগাররা। আজ দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয় তুলে নেয়। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে এদিন মুন্সিয়ানার পরিচয় দেয় বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা।
রোববার (৩১ জুলাই) জিম্বাবুয়ের হারারেতে ম্যাচটি শুরু হয় বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায়। টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতে মোসাদ্দেকের ঘূর্ণিতে পড়ে জিম্বাবুয়ে। মোসাদ্দেক একাই তুলে নেন পাঁচ উইকেট। পরে অভিজ্ঞ সিকান্দার রাজার অর্ধশত রানে ভর করে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা। জবাবে বাংলাদেশ লিটন দাসের অর্ধশত রানে ভর করে ১৫ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখেই জয় তুলে নেয়। এতে করে তিন ম্যাচ সিরিজে এখন ১-১ সমতা বিরাজ করছে।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই মোসাদ্দেকের ঘূর্ণিতে পড়ে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে। প্রথম ওভারের প্রথম বল ও শেষ বলে দুই ব্যাটারকে তুলে নেন মোসাদ্দেক। এরপর নিজের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ ওভারে আরও একটি করে উইকেট তুলে নেন। এতে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে ফাইফারের স্বাদ পান তিনি। নিজের কোটার ৪ ওভার বোলিং শেষে ২০ রান দিয়ে তার ঝুলিতে ৫ উইকেট। বাংলাদেশের পক্ষে টি-টোয়েন্টিতে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে যৌথভাবে দ্বিতীয় সেরা বোলিং ফিগার এখন তার।
তবে মোসাদ্দেকের বোলিং শেষ হতেই ম্যাচে ফেরে স্বাগতিকরা। দলকে একাই টেনে তোলেন অভিজ্ঞ সিকান্দার রাজা আর রায়ান বার্ল। মোস্তাফিজ, শরিফুল, হাসানদের শাসন করে সিরিজে টানা দ্বিতীয় অর্ধশত তুলে নেন রাজা। ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করে বার্ল করেন ৩১ বলে ৩২ রান। ২৭ মাস পর দলে ফেরা হাসান বার্লকে ফেরালে ভাঙে ৬৫ বলে ৮০ রানের পার্টনারশিপ। বার্লের বিদায়ের কিছুক্ষণ পর রাজাকে ফেরান মোস্তাফিজ। তার আগে অবশ্য ৫৩ বলে ৪টি চার ও ২টি ছয়ে ৬২ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন রাজা। শেষদিকে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার ৬ এবং লুক জংউইয়ের ৫ বলে ১১ রানের সুবাদে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রানের পুঁজি পায় জিম্বাবুয়ে।
জিম্বাবুয়ের দেয়া ১৩৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৩৭ রান তোলেন দুই টাইগার ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার ও লিটন দাস। এদিন ব্যাট হাতে ফের একবার ব্যর্থতার পরিচয় দেন তরুণ ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে ব্যক্তিগত ৭ রান করে রিচার্ড এনগারাভার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে লিটন ও বিজয় ৪১ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ৭৮ রানে ক্যারিয়ারের ৬ষ্ঠ অর্ধশত তুলে উইলিয়ামসের বলে এলবির শিকার হয়ে বিদায় নেন লিটন। তার আগে অবশ্য ৩৩ বলে ৬ চার ও ২ ছয়ে ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন।
লিটনের বিদায়ের ৪ বল পরেই সিকান্দার রাজার শিকার হয়ে বিদায় নেন ১৫ বলে ১৬ রান করা এনামুল হক বিজয়। চতুর্থ উইকেটে আফিফ হোসেন ও নাজমুল হোসাইন শান্ত আর কোনও উইকেট পড়তে দেননি। এ দুজন ৫৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে বাংলাদেশকে জয় পাইয়ে দিয়ে মাঠ ছাড়েন। আফিফ ২৮ বলে ৩০ ও শান্ত ২১ বলে ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন।
আগামী ২ আগস্ট একই মাঠে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। যেটিকে অঘোষিত ফাইনাল হিসেবে রূপ নিয়েছে।