কথাসাহিত্যিক, গবেষক, বাংলা একাডেমির ফেলো ও সাবেক পরিচালক বশীর আলহেলাল আর নেই।(ইন্নালিল্লাহি... রাজিউন)।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
এদিকে বশীর আলহেলালের মরদেহ বিকেল ৫ টায় শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আনা হয় এবং এখানে তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
একাডেমি কর্তৃপক্ষ তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন,বশীর আলহেলাল ছিলেন বাংলা একাডেমি পরিবারের একান্ত আপনজন। তাঁকে হারিয়ে আমরা শোকস্তব্ধ। তারা বশীর আলহেলালের প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করছে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি জ্ঞাপন করছে আন্তরিক সমবেদনা।
তিনি ৬ই জানুয়ারি ১৯৩৬ সালে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার তালিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তালিবপুর, জলপাইগুড়ি, রাজশাহী এবং কলকাতাতে শিক্ষা সম্পন্ন করেন। পেশাজীবনে কিছুকাল কলকাতায় সাংবাদিকতায় যুক্ত ছিলেন। ১৯৬৭ সালের ৯ জুলাই তিনি বাংলা একাডেমির অনুবাদ বিভাগে সহ-অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। একাডেমির বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্ব পালন শেষে ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও পত্রিকা বিভাগ থেকে ১৯৯৪ সালে ৪ জানুয়ারি পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
তিনি একাধারে কথাসাহিত্যিক, শিশুসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক-গবেষক ও অনুবাদক। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে,কালো ইলিশ, আনারসের হাসি, কা-ারী, কিশোর বাংলা উচ্চারণ মঞ্জরি,বাংলা ভাষার নানান বিবেচনা, বাংলা গদ্য, আমাদের কবিতা, ভাষা আন্দোলনের সেই মোহনায়, প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ, বেলগ্রেডের ডাক,তাঁদের সৃষ্টির পথ, আমাদের বিদ্বৎসমাজ, ঘৃতকুমারী, জীবনের সুখ,শেষ পানপাত্র, নূরজাহানদের মধুমাস, শিশিরের দেশে অভিযান।
এছাড়াও তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস এবং বাংলা একাডেমির ইতিহাস গ্রন্থের লেখক। এছাড়াও মূল উর্দু থেকে অনুবাদ করেছেন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা সম্পর্কে হামুদুর রহমান কমিশনের রিপোর্ট।
সাহিত্যে অবদানের জন্য বশীর আলহেলাল আলাওল সাহিত্য পুরস্কার এবং বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন