বিএনপি চেয়ারপারস খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী। এরই মধ্যে তার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর বিষয়ে মতামত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।
খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তির আবেদনের অগ্রগতি কতদূর জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার ছোট ভাই আমাদের কছে একটি আবেদন নিয়ে আসছিলেন। আমরা যথাযথ প্রক্রিয়া করার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলাম। আপনারা জানেন, আমি বিদেশে ছিলাম। আমি এখনই ফিরেছি। আইন মন্ত্রণালয় যে অভিমত দিয়েছে, সে অনুযায়ী প্রক্রিয়া চলছে। আমি তো অফিসে মাত্রই আসলাম। প্রক্রিয়া কোন পর্যন্ত, আমি না জেনে বলতে পারব না।
সেপ্টেম্বরের ২৪ তারিখ দণ্ড স্থগিতের সময় শেষ হবে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ১৭ তারিখে বিদেশে যাবেন, সেক্ষেত্রে আজকের দিনটিই আছে- এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা অপেক্ষা করুন। ইয়েস, নো- কোনোটাই তো আমরা বলতে পারব না। এটা প্রক্রিয়ায় আছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ওখানে যাবে। প্রক্রিয়াধীন আছে।
এর আগে, খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ছে বলে জানিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি জানান, পূর্বের শর্ত বহাল রেখেই এ মতামত দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বিদেশে চিকিৎসা নিতে হলে খালেদা জিয়াকে পুনরায় কারাগারে গিয়ে আবেদন করতে হবে। বিএনপি নেত্রীর আইনজীবীরা সরকারের এ সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেন।
বিদেশে চিকিৎসার আবেদন করতে হলে বিএনপি চেয়ারপারসনকে আবার জেলে ফিরতে হবে। গত মাসের শেষের দিকে আইনমন্ত্রীর এ বক্তব্যেই আভাস ছিল কী সিদ্ধান্ত আসতে যাচ্ছে তার স্থায়ী মুক্তি চেয়ে পরিবারের আবেদনে।
রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) এক অনুষ্ঠান শেষে আইনমন্ত্রী জানান, দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর পক্ষে তারা মত দিয়েছেন। বহাল থাকবে বিদেশে না যাওয়ার আগের শর্তই।
আইনমন্ত্রী বলেন, যে আবেদনপত্রের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেই আবেদনপত্রটি কিন্তু নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এ অবস্থায় এটা পরিবর্তন করার আইন নেই। যদি এটা করতে হয় আমি আগেও বলেছি এখনো বলছি, তাকে আবার জেলখানায় ফিরে গিয়ে এটা বাতিল করতে হবে। বাতিল করে নতুন করে আবেদন করতে হবে। ছয় মাসের জন্য বৃদ্ধি করা হয়েছিল আমার মন্ত্রণালয় থেকে এ মতামত দেওয়া হয়েছে যে, এটা আরও ছয় মাসের জন্য বৃদ্ধি করা হোক।
এ সিদ্ধান্তে হতাশ বিএনপি। তার আইনজীবী বলছেন, আরেকটু মানবিক হতে পারত সরকার।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন জানান, একজন প্রধানমন্ত্রীর হাতে সব ক্ষমতা, সে কারণেই এখন এ প্রধানমন্ত্রী দেশের রাজনীতির কথা চিন্তা করে, দেশের গণতন্ত্রের কথা চিন্তা করে, সুশাসনের কথা চিন্তা করে তিনি তাকে মুক্তি দিতে পারতেন।
জিয়া অরফানেজ ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী গত বছরের ২৫ মার্চ সাময়িক মুক্তি পান। এ নিয়ে তার মুক্তির মেয়াদ চারদফা বাড়ানো হয়।