কোরবানি দেওয়া পশুর চামড়া কেনাবেচায় আগ্রহ নেই কোরবানিদাতা ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের। রোববার (১০ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এমন তথ্যই পাওয়া যায়। অধিকাংশ স্থানে চামড়া রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। অনেকেই কোরবানির পশুর চামড়া কেনার লোক না পেয়ে বা বিক্রির ঝামেলা এড়াতে মাদ্রাসা বা লিল্লাহ বোডিং এ দান করে দিচ্ছেন।
এবার গরুর চামড়ার দর প্রতি বর্গফুটে ৭ টাকা আর খাসির চামড়ার দাম ৩ টাকা বাড়ানো হয়েছে। সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, এবার ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৪৭ থেকে ৫২ টাকা। ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা। এছাড়া খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ঢাকায় ১৮ থেকে ২০ টাকা, বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকার বাইরে ও ঢাকায় বকরি ও খাসির চামড়ার দাম একই থাকবে।
পুরান ঢাকার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী রাকিবুল ইসলাম বলেন, চামড়া বিক্রিতে মানুষের আগের মতো আগ্রহ নেই। মানুষ ভাবে ১টা চামড়া বিক্রি করতে আসলে ২০০-৩০০ টাকা রিকশা ভাড়া দেওয়া লাগবে। কিন্তু চামড়ার দাম পাওয়া যাবে ৫০০-৬০০ টাকা। তার চেয়ে মাদ্রাসায় দান করে দিলে ওরাই নিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আগে এই বেলা (বিকেল ৪টা) পর্যন্ত ৬০০-৭০০ চামড়া সংগ্রহ করা যেত। এবার এখন পর্যন্ত মাত্র ৬০টা চামড়া সংগ্রহ হয়েছে। আগের মতো কেউ চামড়া সংগ্রহ করে এখানে বিক্রি করতেও আসে না।
রাজধানীর মোতালেব প্লাজার পেছনে দেখা যায়, এক স্তূপ চামড়া পড়ে আছে। সেখানে মন খারাপ করে বসে আছেন কয়েকজন যুবক। জানতে চাইলে শফিক নামে একজন বলেন, চামড়া তো কিনে ফেলেছি। কিন্তু এখন বিক্রি করার জায়গা পাচ্ছি না। দামও পাচ্ছি না।
রাজধানীর পরীবাগ থেকে হাতিরপুল বাজারে সংযোগ সড়কের এক পাশে একাধিক গরু কোরবানি করতে দেখা যায়। সেখানে চামড়া ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা রিকশা চালক রিপন বলেন, সকাল থেকে ৬০-৭০টা গরু জবাই হলো এখানে।
পুরান ঢাকার বংশাল এলাকার বাসিন্দা ফিয়াদ নূর রহমান বলেন, আমরা ৬৮ হাজার এবং ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকার গরু কিনেছিলাম। দুপুরে জবাই দেয়ার পর থেকে কেউ চামড়া কিনতে আসেনি। এলাকায় চামড়া সংগ্রহের কাউকে পাওয়াও যায়নি। পরবর্তীতে চামড়াগুলো একজনকে দান করে দিয়েছি।