দুর্নীতির মামলায় জামিন বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। বুধবার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ফলে ইসমাইল হোসেন সম্রাটকে কারাগারে থাকতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
জামিন বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে সম্রাটের করা আপিল আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয় গত সোমবার (৮ই আগস্ট)। পরে এ বিষয়ে আদেশের জন্য ১০ আগস্ট দিন ধার্য করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আদালতে ওইদিন সম্রাটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মো. মোস্তাফিজুর রহমান খান। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. খুরশিদ আলম খান।
আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, বিচারিক আদালত তাকে জামিন দিয়েছিলেন। সেই জামিনাদেশের বিরুদ্ধে দুদক হাইকোর্টে আবেদন করেছিল। দুদকের আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট তার জামিন বাতিল করেছিলেন। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ইসমাইল হোসেন সম্রাট আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেছিলেন। যে আবেদন আজ খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
গত ১১ মে অবৈধ সম্পদের মামলায় সম্রাটের পক্ষে করা জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান। চারটি মামলার মধ্যে তিনটিতে আগেই জামিন পেয়েছিলেন সম্রাট। ফলে তার মুক্তিতে আর কোনো বাধা ছিল না।
২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সম্রাট বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। অভিযোগ আছে তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অংকের কমিশন নিতেন। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন।
তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি ও উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন ও বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এছাড়া তার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম।
ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর সম্রাটকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। পরে তাকে বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়।