দেশের আরো একটি দৃষ্টিনন্দন সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায়। পিরোজপুরের কচা নদীর উপর বেকুটিয়ায় অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। সেতুটি চালু হলে সড়ক পথে বরিশালের সাথে খুলনার যোগাযোগ সহজ হবে। পাশাপাশি এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে আসবে আমুল পরিবর্তন। স্বপ্নপূরণ করবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের।
পিরোজপুরের কচা নদীর উপর দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৪৫ ফুট প্রশস্ত ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর নির্মান কাজ শেষে এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। ১০টি পিলার এবং ৯টি স্প্যানের উপর ২ লেনের সেতুটি দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন। সেতুর দুই প্রান্তে নির্মাণ করা হয়েছে দীর্ঘ ১ হাজার ৪৬৭ মিটার দৃষ্টিনন্দন সংযোগ সড়ক।নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৮৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬৫৪ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে চীন সরকার। বাকী ২৪৪ কোটি টাকা নিজস্ব অর্থায়নে।
বরিশাল-পিরোজপুর খুলনা মহাসড়কের পিরোজপুরে কচা নদীর উপর এই সেতুটি চালু হলে বরিশাল ও খুলনার মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ সম্ভব হবে। পাশাপাশি পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ গড়ে উঠবে।
দীর্ঘ কর্মযজ্ঞ শেষে এখন স্বপ্নকে ছুঁয়ে দেখার প্রতিক্ষায় প্রহর গুনছেন এ অঞ্চলের মানুষ। তারা মনে করেন সেতুটি ঘিরে এই অঞ্চলের কৃষি, ব্যবসা বাণিজ্য ও শিক্ষার প্রসার ঘটবে বহুগুন। এই সেতু দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা গতিশীল করার পাশাপাশি এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন ঘটাবে মনে করছে স্থানীয় প্রশাসন।
সেতুটি নির্মাণে স্থানীয়দের সহযোগিতার প্রশংসা করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ১৭ ব্যুরো গ্রুপ লিমিটেডের কর্মকর্তা। এটি দুই দেশের নিবিড় সর্ম্পকের প্রতিক বলেও মনে করেন তিনি।
বলেন, 'স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় সেতুর নির্মান কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হয়েছে। আমরা এখানকার বাসিন্দাদের আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়েছি। এই সেতু আগামীতে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক আরো মজবুত করবে। কচা নদীর উপর সেতুটি চালু হলে এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ দিনের ভোগান্তি কমবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগ'।
দৃষ্টিনন্দন এই সেতুটি দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ভীড় করছে অনেকে। ২০০০ সালে পিরোজপুরের কচা নদীর উপর আধুনিক সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে ২০১৮ সালে অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন তিনি।