আসছে বাজেটে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। করোনা অতিমারির পর দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তার অংশ হিসেবেই এই তিনটি বিষয় গুরুত্ব পাচ্ছে। ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের এই বিনিয়োগে টানতে করের বোঝা না চাপিয়ে এর আওতা বাড়বে নতুন বাজেটে। আর এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা।
করোনার দুর্যোগ কাটিয়ে না উঠতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে সৃষ্ট সংকট দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকেও হুমকির মুখে ফেলেছে। প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ জরুরি। নতুন বাজেটে মোট বিনিয়োগ ধরা হয়েছে জিডিপি’র ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ। যার ২৪ দশমিক ৯ শতাংশ বেসরকারি খাত এবং ৬ দশমিক ৬ শতাংশ আসবে সরকারি খাত হতে। যদিও গত কয়েক বছরে বেসরকারি বিনিয়োগের গড় হার ঘুরপাক খাচ্ছে সেই ২৩-২৪ শতাংশেই।
শ্রমশক্তি জরিপ থেকে দেখা যায় প্রতিবছর দেশে ২০ লাখ তরুণ-তরুণী চাকরির বাজারে প্রবেশ করে। কিন্তু ২০২০ সাল থেকে কর্মসংস্থান কমতে শুরু করেছে। আইএলও’র সা¤প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে ২০২২ সালে প্রায় ৩৬ লাখ মানুষ বেকার থাকবে। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জকে মাথায় রেখে বাজেট প্রণয়ন করছে সরকার। এজন্য বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে।
করোনার আঘাতে গত দুই বছরে বাংলাদেশে অন্তত ৩ কোটি ৪৫ লাখ মানুষ দারিদ্যসীমার নিচে চলে গেছে। ২০১৯ সালে দেশে দরিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের হার ২০ দশমিক ৫ শতাংশ, বর্তমানে তা ৪০ শতাংশের কাছাকাছি চলে গেছে। আসন্ন বাজেটে তাই দারিদ্র বিমোচনে বরাদ্দ বাড়বে। আয় বৈষম্য কমাতে শোভন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির তাগিদ দেন অর্থনৈতিক খাত সংশ্লিষ্টরা।
সরকারের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই প্রস্তুত হচ্ছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের নতুন বাজেট।