হলিউডের অস্কারজয়ী অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকে অভিনয়ের পাশাপাশি সমাজসেবামূলক কাজে সামনের সারিতে দেখা যায় । ইউএনএইচসিআরের হয়ে বিশ্বব্যাপী কাজ করেন তিনি। ওই কাজের সূত্রে বিশ্ব বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তিনি উদ্বাস্তু মানুষের চিঠি পান। এবার সেসব চিঠি বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে ইনস্টাগ্রামে নিজের প্রোফাইল খুলেছেন তিনি।
ইনস্টাগ্রামের প্রথম পোস্টেই তুলে ধরলেন এক আফগান মেয়ের চিঠি। তালেবানরা আফগানিস্তান দখল করার আগে কেমন ছিল সেখানকার মেয়েদের জীবন, তাই উঠে এসেছে এ চিঠিতে। আফগান তরুণী চিঠিতে লিখেছে, তালেবানরা তাদের দেশ দখল করার পর তারা আর স্কুলে যেতে পারে না। স্বাধীনতা হারিয়ে তারা এখন গৃহবন্দি। একটা সময় স্বাধীনভাবে নিজেদের মনের কথা ব্যক্ত করতে পারত আফগান মেয়েরা। তালেবানরা আসার পর থেকেই ভয়ে ভয়ে তাদের দিন কাটছে। সব স্বপ্নও জলাঞ্জলি দিয়েছে তারা। এ কারণে আফগানিস্তানের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেন অস্কারজয়ী এ অভিনেত্রী।
ইনস্টাগ্রাম পোস্টে তিনি জানান, আফগানিস্তানের মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগ করার এবং স্বাধীনভাবে নিজেদের প্রকাশ করার ক্ষমতা হারাচ্ছে। তাদের জীবনের নানা তথ্য এবং বিশ্বব্যাপী তাদের মৌলিক অধিকারের লড়াই, সেসব বিষয়ে তাদের কণ্ঠস্বর শেয়ার করতে আমি ইনস্টাগ্রামে এসেছি।
ওই পোস্টে অ্যাঞ্জেলিনা আফগান পরিস্থিতি নিয়ে হতাশার কথা জানান। অতীতের কিছু প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে সন্ত্রাসী হামলার দুই সপ্তাহ আগে তিনি আফগানিস্তানের সীমান্তে গিয়েছিলেন এবং ২০ বছর আগে তালেবানদের আক্রমণ থেকে বেঁচে ফেরা আফগান শরণার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল তার। আবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখে যথেষ্ট হতাশ হয়েছেন তিনি এবং এবার শুধু একটা এলাকা নয় সম্পূর্ণ দেশ ছাড়া হচ্ছেন সেখানকার নাগরিকরা।
শুধু তাই নয়, বিশ্বনেতাদের কটাক্ষ করে অ্যাঞ্জেলিনা বলেন, বহুদিন ধরে আফগানিস্তানের এরকম অনেক মানুষকে তালেবান অত্যাচারে দেশ ছেড়ে, নিঃস্ব হয়ে প্রাণ হাতে করে অন্যদেশে চলে আসতে দেখেছেন তিনি। আর এখন যখন সবার এমন অবস্থা তারপরও আফগানিস্তানের শরণার্থীদের কীভাবে বোঝার মতো দেখা হচ্ছে, সেটা ভেবেও তিনি যথেষ্ট হতাশাগ্রস্ত। নারী এবং ছোট মেয়েদের ওপর অত্যাচারের মাত্রা সম্পর্কেও আওয়াজ তুলেছেন তিনি। তাদের নিজেদের শিক্ষা এবং স্বাধীনতার প্রতি লড়াই দেখে আপ্লুত অভিনেত্রী। আফগান মেয়েদের পাশে থাকতে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।