ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য ভিন্ন ধরনের নীলনকশা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। রিজভী বলেন, ‘এবার সরকারের একটা অন্য ধরনের পরিকল্পনা আছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ম্যানেজার হচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)।’
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ সোমবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন নামক একটি সংগঠনের উদ্যোগে বিগত দিনে বিএনপির আন্দোলনে গুম, খুন হওয়া পরিবারগুলোর সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।
রিজভী বলেন, ‘অবৈধভাবে টিকে থাকার জন্য ২০১৪ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিহীনভাবে নির্বাচন করেছে আওয়ামী লীগ। ২০১৮ সালে মিডনাইট নির্বাচন করেছে। এবার একটা অন্য ধরনের পরিকল্পনা তাদের আছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রধান ম্যানেজার হচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।’
‘নির্বাচনে কেউ তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ালে আপনারা রাইফেল নিয়ে দাঁড়াবেন’ সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের এমন মন্তব্যের প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘এ নির্বাচন কমিশনার শেখ হাসিনার একেবারে নিজস্ব ক্রীতদাস হিসেবে কাজ করছেন। তিনি এটারই প্রমাণ দিচ্ছেন। দেশের সাংবিধানিক একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান এ কথাটি কী করে বলতে পারেন। যত অবৈধ রাইফেল, বন্দুক, তলোয়ার সব তো আওয়ামী লীগের হাতে। ভোটারেরা তো তলোয়ার, রাইফেল নিয়ে যান না। তাঁরা তাদের অধিকারটা প্রতিষ্ঠা করতে চান। সে অধিকারটা হচ্ছে ভোটকেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দেবে। এ নিশ্চয়তা চান ভোটারেরা।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, ‘তলোয়ার নিয়ে এলে রাইফেল নিয়ে নামবেন—এ কথাটা কেন আসবে? আপনি তো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে রয়েছেন। নির্বিঘ্নে নিশ্চিন্তে মানুষের ভোটার অধিকার প্রয়োগে পরিবেশ তৈরির দায়িত্ব তো নির্বাচন কমিশনের। আপনি তো এটা করবেন না। যেদিন আপনাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সেদিন থেকে সারা দেশের মানুষ জানে, আপনি প্রধানমন্ত্রীর নীলনকশা বাস্তবায়ন করবেন।’
রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে কোনো সমঝোতা নয়। এদের পদত্যাগ করতে হবে। শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই, দলীয় সরকারের অধীনে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনেও নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। নির্বাচন তখন সুষ্ঠু হবে, যখন নির্দলীয় সরকার গঠন করা হবে। বিএনপি সে লক্ষ্যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ বক্তব্য দেন।