মহামারি করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত দুই সপ্তাহব্যাপী কঠোর বিধিনিষেধের অষ্টম দিন আজ বৃহস্পতিবার। করোনার সংক্রমণ রোধকল্পে কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে মাঠে রয়েছেন পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা। লকডাউনের শুরু থেকেই বিভিন্ন স্থানে তাদের টহল দিতে দেখা গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে চেকপোস্টে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
গত এক সপ্তাহের তুলনায় রাজধানী ঢাকার সড়কগুলোতে কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা কিছুটা বেশি দেখা গেছে। তবে চেকপোস্টে কড়াকড়ি ছিল চোখে পড়ার মতো।
এদিকে সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় মানুষের উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে। এসব এলাকার মধ্যে ফকিরাপুল, রাজারবাগ, মালিবাগ, বাড্ডা, দৈনিক বাংলার মোড়, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, মগবাজার অন্যতম। এসব এলাকায় ব্যক্তিগত বাহনের পাশাপাশি মানুষের উপস্থিতিও ছিল বেশি। আলাপ করলে তারা জানান, অফিসে যাওয়ার জন্যই তারা বাসা থেকে বের হয়েছেন।
সকালে যাত্রাবাড়ী, টিকাটুলি, মতিঝিল, খিলগাঁও, পল্টন, এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, রিকশা ও ভ্যানে করে মানুষ নিজের গন্তব্যে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন বিভিন্ন ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে গ্রেফতার ও জরিমানা করা হচ্ছে। এছাড়া জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিতরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে পরিচয়পত্র দেখিয়ে তারা তাদের গন্তব্যে বা কর্মস্থলে যেতে পারছেন।
গত এক সপ্তাহে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়ায় রাজধানী ঢাকায় ৪ হাজার ১৮৭ জন জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
ডিএমপি’র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ইফতেখারুল ইসলাম বাসস’কে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ডিএমপি’র আটটি ক্রাইম ও ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে। মোবাইল কোটে ২৪৫ জনকে ১লাখ ৭১ হাজার ৯৮০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া সড়ক পরিবহন আইনে ৮০৪টি গাড়িকে ১৮ লাখ ৬৮ হাজার ৫শ’ টাকা জরিমানা করা হয়।
এডিসি ইফতেখায়রুল জানান,সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালনে একযোগে রাজধানীর রমনা, লালবাগ, মতিঝিল, ওয়ারী, তেজগাঁও, মিরপুর, গুলশান, উত্তরার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের বিভিন্ন চেকপোস্ট, তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
বিধিনিষেধের শুরুতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অযৌক্তিক কারণে বাইরে বের হওয়ায় রাজধানীতে প্রথম দিন ৫৫০ এবং দ্বিতীয় দিন ৩২০ জন, তৃতীয় দিনে ৬২১ জন, চতুর্থ দিনে ৬১৮ জন, পঞ্চম দিনে ৫০৯, ৬ষ্ঠ দিনে ৪৬৭ জন ও সপ্তম দিনে ১ হাজার ১০২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করতে অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে র্যাবও মাঠে কাজ করছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।