রবিবার, ০১ অক্টোবর ২০২৩, ০৫:১৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
৪৩তম বিসিএস: মৌখিক পরীক্ষা ৩ সেপ্টেম্বর থেকে সোলসের নতুন গান ‘যদি দেখো’ রংপুরে ১৪ ছাত্রলীগ নেতাকে অব্যাহতি ‘খালেদা জিয়ার ধারণা ছিল আমি মারা যাব’ সর্বজনীন পেনশন ঘোষণা করল বৈশাখী টিভি কাদিসের প্রবল প্রতিরোধ ভেঙে বার্সার জয় ভোটের আগেই প্রবাসীদের এনআইডি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিষেধাজ্ঞাকে পাত্তা দিচ্ছেন না চমক ঋণের ৫ কোটি ডলার ফেরত দিল শ্রীলংকা নবীনগর গ্র্যাজুয়েট এসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্ব গ্রহন ও প্রথম সভা অনুষ্ঠিত পাকিস্তানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের  প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কমেছে সোনার দাম নবীনগর উপজেলা গ্র্যাজুয়েট এসোসিয়েশনের ‘বার্ষিক সাধারণ সভা ও নির্বাচন-২০২৩’ অনুষ্ঠিত প্যান্ডেলে বসে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে খাবার খেলেন প্রধানমন্ত্রী হজ করতে গিয়ে ৫ ঘন্টা নিখোঁজ ধর্ম প্রতিমন্ত্রী!

নবীনগরে নারী কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : নভেম্বর ১৩, ২০২২

নবীনগর পৌরসভার এক নারী কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধা ভাতা হাতিয়ে নেওয়ার াভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে  নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের ধরাভাঙ্গা গ্রামের শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ল্যান্স নায়েক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নং৩৭৯৮ এর  সন্তান সেজে আসল পরিচয় গোপন রেখে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করছেন নবীনগর পৌরসভার আলমনগর গ্রামের মোঃ কুদ্দুস মিয়ার স্ত্রী ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর নিলুফা ইয়াসমিন।

তিনি ২০১৮ সালের অক্টোবর মাস থেকে প্রতিমাসে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার ভাতা ৩০ হাজার এবং ওই শহীদ মুক্তিযোদ্ধার চাকুরীর পেনশন প্রতিমাসে ১২ হাজার টাকা করে উত্তোলন করে আসছেন। তার এসএসসি’র সার্টিফিকেটে প্রকৃত পিতার নাম গোপন করে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে বড়িকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওই শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয়ের জন্য ইউপি চেয়ারম্যানের সনদ ও প্রত্যায়ন সংগ্রহ করে অনৈতিকভাবে কর্তৃপক্ষের অনুমোদ নিয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বনে যান।

তিনি প্রতারনার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এ ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য সরকারের ঘোষিত ঋণও তিনি উত্তোলন করেন। কাউন্সিলরের এই প্রতারনার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় এক সমাজসেবিকা ও নারী উদ্ধোক্তা ছাবিনা ইয়াসমিন পুতুল সোমবার(০৭/১১)উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে এক লিখিত এক অভিযোগ দাখিল করেন। অনুসন্ধানে জানা যায়,উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড্ডা গ্রামের আব্দুস সামাদ মিয়ার মেয়ে সুরাইয়া খাতুন এর সাথে উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের ধরাভাঙ্গা গ্রামের ছোবাহান মিয়ার ছেলে সেনাবাহিনীতে কর্মরত মোঃ ওয়াহিদুজ্জামানের সাথে ১৯৭০ সালে আনুমানিক নভেম্বর মাসের দিকে বিয়ে হয়। বিয়ের পর ১৯৭১ এর মার্চে যুদ্ধশুরু হলে তিনি যুদ্ধে চলে যান। আর বাড়ি ফিরেননি তিনি যুদ্ধে শহীদ হন। এর পর আব্দুস সামাদ তার মেয়ে সুরাইয়াকে তার বাড়িতে বাড্ডা গ্রামে নিয়ে আসেন। এবং নিজ গ্রামের চরবাড্ডা গ্রামের আবদুর রহিম মিয়ার সাথে সুরাইয়া খাতুনের ২য় বিয়ে দেন। অনুসন্ধানে দেখা যায়, কাউন্সিলর নিলুফা ইয়াসমিন তার প্রকৃত পরিচয় গোপন করে ১৯৭১ জন্ম দেখিয়ে তার মায়ের প্রথম স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াহিদুজ্জামানের ভূঁয়া সন্তান সেজে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করে আসছেন। তার জাতীয় পরিচয় পত্রে জন্ম তারিখ ১ অক্টোবর ১৯৭৮, এন আই ডি নং-১২২৮৫০১৭৮৬৪৬৬। ১৯৯২ সালে উপজেলার আলমনগর গ্রামের মোঃ সলিম উদ্দিন আহম্মেদ এর ছেলে মোঃ আবদুল কুদ্দুছ মিয়ার সাথে তার বিয়ে হয়। ৯২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর তাদের বিয়ে রেজিষ্ট্রেরী হয়। ওই রেজিস্ট্রি বিয়ের কাবিন নামায় তার বয়স উল্লেখ করা হয় ১৯ বছর। বিয়ের কাবিন নামার বয়স অনুযায়ী তার বর্তমান বয়স হয় ৪৯ বছর। ঠিকানা দেয়া আছে সাং চরবাড্ডা পোষ্ট জীবনগঞ্জ। তার এন আই ডি কার্ড অনুযায়ী বয়স হয় ৪৪ বছর । ২০১৫ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারীতে নির্বাচন কমিশনের কাছে বয়স সংশোধনের আবেদন করে ৭ বছর বয়স কমিয়ে ১ অক্টোবর ১৯৭৮ থেকে পরিবর্তন করে ৩ মার্চ ১৯৭১ করিয়ে নেন। ২০১৫ সালের আগে তিনি নবীনগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থেকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের প্রত্যায়ন পত্র নিতে গিয়েছিলেন। সেই সময় কথিত বাবার মৃত্যুর তারিখ আর এনআইডি কার্ডের তার জন্ম তারিখের বিশাল পার্থক্য থাকায় সংসদ থেকে সেই সময় প্রত্যায়ন পত্র দেয়া হয় নাই। ওই শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কোন বংশধর না থাকার সুবাধে বড়িকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে জাতীয়তা সনদ ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের প্রত্যায়ন পত্র সংগ্রহ করেন। এই কাগজ নিয়ে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ওয়াহিদুজ্জামানের কর্মস্থল যশোহর ক্যান্টনমেন্ট থেকে তার কাগজপত্র সংগ্রহ করে ভাতার জন্য আবেদন করেন। অনৈতিকভাবে জামুকা’র অনুমোদন নিয়ে ২০১৮ সালের অক্টোবর মাস থেকে ওই কাউন্সিলর শহীদ মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন শুরু করেন। এর পর থেকে তিনি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসাবে পরিচয় দিতে থাকেন। এর আগে তিনি যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সে কথা স্থানীয়রা শুনেননি কখনো। ওয়াহিদুজ্জামানের পিতা আবদুছ ছোবাহান মিয়া’র দুই সংসারের পাঁচজন সন্তান তারা কেউই জীবিত নেই। ওয়াহিদুজ্জামানের অন্যান্য ভাইদের উত্তরসরীরা কেউই গ্রামে নেই অনেক আগেই সহায় সম্পত্তি বিক্রী করে চলে গেছে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, কাউন্সিলর নিলুফা ইয়াসমিন ১৯৮৮ মার্চ মাসে উপজেলার মাঝিয়ারা প্রেমদিনী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএস সি পাস করেন যাহার সার্টিফিকেট ক্রমিক নং-১৬৭৪০২ রোল-নবী নং-৪৯৭৬৩ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড কুমিল্লা। তার ওই এসএসসি পাসের সর্টিফিকেটে তার প্রকৃত বাবার নাম আবদুর রহিম। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলনের আবেদন পত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট দাখিলের বিধান না থাকায় সুযোগটা নেন ওই কাউন্সিলর। কিন্ত তিনি যখন ১৫ সালে বয়স সংশোধনের আবেদন করেন সেখানে তিনি বয়স প্রমানের জন্য তার ওই এসএসসি’র সার্টিফিকেট দাখিল করেন।

এদিকে

 নবীনগরে আলোচিত নারী কাউন্সিলর নিলুফা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে এবার খালি ষ্টম্পে স্বাক্ষর নিয়ে মনগড়া কথা লিখে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই চাঁদা দাবীর অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অডিওতে ভাইরাল “ আমি নেই না,আমাকে দিয়ে যায়”কাউন্সিলরের এই ডাইলক এখন সকলের মুখে মুখে। গত বুধবার(৯/১১)রাতে উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের হক মিয়ার মেয়ে তানিয়া আক্তার অফিসার ইনচার্জ নবীনগর থানা বরাবরে লিখিত এ অভিযোগ করেন যাহার এসডিআর নং-১৮৭১। সুত্রে জানা যায,তানিয়া আক্তারের সাথে উপজেলার নিমতলা গ্রামের আবু তাহের মিয়ার ছেলে আবির আহম্মেদের সাথে গত ২ বছর পূর্বে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। পারিবারিক নানাহ্ বিষয় নিয়ে স্বামীর সাথে স্ত্রীর বিবেধ সৃষ্টি হলে গত ৩ নভেম্বর ওই মহিলা কাউন্সিলরের নেতৃত্বে একটি শালিশ বৈঠক হয়।

বৈঠক তাদের ডির্ভোসের সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে আরো সিদ্ধান্ত হয় সন্তান মা’য়ের কাছে ১৫ মাস থাকবে এবং তার ভরণ পোষন হিসাবে আবির ২০ হাজার টাকা তানিয়াকে দিবে। সেই টাকা তাকে না দিয়ে আরো ৫০ হাজার টাকা দাবী করেন ওই কাউন্সিলর।টাকা না দিলে ছেলেকে নিয়ে যাওয়াসহ পরিবারের লোকজনদেরকে নানাহ্ হুমকি দামকি দিচ্ছে। এ ব্যাপারে কাউন্সিলর নিলুফা ইয়াসমিনকে মুঠোফোনে রিং করলে তিনি সাংবাদিকের পরিচয় পেয়ে কলটি কেটে দেন। পরে তাকে একটি ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোন জবাব দেননি। এ ব্যাপারে থানার ইনচার্জ সাইফুদ্দিন আনোয়ার অভিযোগ প্রাপ্তি’র স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি প্রাথমিক তদন্তাধীন আছে । তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Enter

Putul

0:12


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ